এতিমখানা
তাযকিয়া ফাউণ্ডেশনের অন্যতম শাখা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এতিমখানা যা এখনো প্রস্তাবিত। তবে আমাদের এতিমখানা হবে একটি আদর্শ এতিমখানা। যারা সত্যিকার অর্থেই এতিম, শুধু তাদেরকে নিয়েই শুরু করা হবে। আমাদের এতিমখানায় ভালো খাবারের ব্যবস্থা থাকবে; ভালো পড়াশুনার জন্যে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। আমাদের এতিমখানার প্রত্যেকটি এতিমের পুরো জীবনের দায়িত্ব আমাদের হাতে থাকবে, অর্থাৎ তার ছোটবেলার থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহনপূর্বক তাকে বাস্তব জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাযকিয়া ফাউণ্ডেশনের এতিমখানা তার সকল প্রয়োজনের দেখাশুনা করবে। তারা যাতে বাস্তব জীবনেও ভালো কিছু করতে পারে, সে জন্যে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাও প্রদান করা হবে।
এতিমখানার ছাত্রবৃন্দ
আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা বলেন,
فَأَمَّا ٱلْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ
অনুবাদঃ সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না। [সুরা দ্বুহা - ৯]
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لاَ تَعْبُدُونَ إِلاَّ اللّهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَقُولُواْ لِلنَّاسِ حُسْناً وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ ثُمَّ تَوَلَّيْتُمْ إِلاَّ قَلِيلاً مِّنكُمْ وَأَنتُم مِّعْرِضُونَ
অনুবাদঃ যখন আমি বনী-ইসরাঈলে র কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্ব জন, এতীম ও দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা করবে এবং যাকাত দেবে, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই অগ্রাহ্যকারী। [সুরা বাকারা - ২:৮৩]
فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْيَتَامَى قُلْ إِصْلاَحٌ لَّهُمْ خَيْرٌ وَإِنْ تُخَالِطُوهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنَ الْمُصْلِحِ وَلَوْ شَاء اللّهُ لأعْنَتَكُمْ إِنَّ اللّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
অনুবাদঃ "দুনিয়া ও আখেরাতের বিষয়ে। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, এতীম সংক্রান্ত হুকুম। বলে দাও, তাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে গুছিয়ে দেয়া উত্তম আর যদি তাদের ব্যয়ভার নিজের সাথে মিশিয়ে নাও, তাহলে মনে করবে তারা তোমাদের ভাই । বস্তুতঃ অমঙ্গলকামী ও মঙ্গলকামীদেরকে আল্লাহ জানেন। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তোমাদের উপর জটিলতা আরোপ করতে পারতেন। নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞ। " [সুরা বাকারা - ২:২২০]
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّآئِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُواْ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاء والضَّرَّاء وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَـئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَـئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ
অনুবাদঃ সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণে র উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্ব জন, এতীম-মিসকীন , মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার। [সুরা বাকারা - ২:১৭৭]
পবিত্র হাদিস শরীফে এতিম প্রসঙ্গঃ
.وَقَالَ بِإِصْبَعَيْهِ السَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى ." أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ، فِي الْجَنَّةِ هَكَذَا " حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ
অনুবাদঃ হযরত সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "আমি ও এতীমের তত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে (পাশাপাশি) থাকবো। এ কথা বলার সময় তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে ইশারা করে দেখান।" [সহীহ বুখারী - ৫৫৭৯]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: خَيْرُ بَيْتٍ فِي الْمُسْلِمِينَ بَيْتٌ فِيهِ يَتِيمٌ يُحْسَنُ إِلَيْهِ، وَشَرُّ بَيْتٍ فِي الْمُسْلِمِينَ بَيْتٌ فِيهِ يَتِيمٌ يُسَاءُ إِلَيْهِ، أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ كَهَاتَيْنِ يُشِيرُ بِإِصْبَعَيْهِ.
অনুবাদঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "মুসলিমদের ঘরসমূহের মধ্যে সেই ঘর সর্বোত্তম, যেখানে কোন এতীম আছে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার করা হয়। মুসলিমদের ঘরসমূহের মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট সেই ঘর যেখানে কোন এতীম আছে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। আমি এবং এতীমের ভরণপোষণকারী বেহেশতে এই দুইটির মতো একত্রে থাকবো। এই বলে তিনি তার দুই আঙ্গুলের দিকে ইংগিত করেন।" [আদাবুল মুফরাদ - ১৩৬]
وعَنْ عَائِشَةَ قَالَت قَالَ رَسُوْلُ الله ﷺ أَنَا وَكَافِلُ اليَتِيمِ لَهُ أوْ لِغَيْرِهِ في الجَنّةِ والسَّاعِي عَلَى الْأَرْمَلَةِ والمِسْكِينِ كالمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللهِ
অনুবাদঃ আম্মাজান আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আমি এবং নিজের অথবা অপরের এতীমের তত্ত্বাবধায়ক জান্নাতে (পাশাপাশি) থাকব। আর বিধবা ও দুঃস্থ মানুষকে দেখাশুনাকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।" [ত্বাবারানী ফিল-আওসাত্ব ৪৭৪২, সহীহুল জামে’ ১৪৭৬]