আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে তা'লীম ও তাওয়াজ্জুহ্ প্রদান
তা'লীম শব্দটির অর্থ হচ্ছে শিক্ষা দান করা। তাওয়াজ্জুহ্ শব্দটির অর্থ হচ্ছে দৃষ্টি নিবদ্ধ করা, মনোনিবেশ করা, অভিমুখী হওয়া ইত্যাদি। এই দুটি শব্দ 'ইল্মের প্রধান দুটি শাখা অর্থাৎ 'ইল্মে শরীয়ত এবং ইল্মে মা'রিফাত শিক্ষার সাথে জড়িত। একজন ব্যক্তি শরীয়তের 'আলিমের সান্নিধ্য লাভ করে তার নিজের মেধাশক্তি, বাকশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি এবং লেখনীর মাধ্যমে যে 'ইল্ম অর্জন করে থাকে, তাঁকেই তা'লীম বলা হয়। অপরদিকে, মা'রিফাতের 'ইল্ম সন্ধানী ব্যক্তি তাওয়াজ্জুহ্ প্রদানে সক্ষম একজন হক্কানী শায়েখের সান্নিধ্য লাভ করে তাঁর ক্বাল্বের মাঝে রক্ষিত আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালার বিশেষ অনুগ্রহে প্রাপ্ত 'ইলমে মা'রিফাত কে তাওয়াজ্জুহ্ গ্রহণের মাধ্যমে নিজের ক্বাল্বের মাঝে স্থানান্তরিত করে এই বিশেষ ইল্ম অর্জন করে থাকে। আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালা ও তাঁর হাবীব ﷺ এর নৈকট্য অন্বেষণকারী ব্যক্তি একজন হক্কানী শায়েখের দিকে গভীর মনোনিবেশ এবং শায়েখও তার দিকে গভীর মনোনিবেশ করার মাধ্যমে শায়েখের ক্বাল্ব থেকে সালেকের ক্বাল্বে 'ইল্মে মা'রিফাত ট্রান্সফার হওয়ার কারণে এ ধরণের শিক্ষা পদ্ধতিকে তাওয়াজ্জুহ্ বলা হয়ে থাকে।
তাযকিয়া ফাউন্ডেশনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে দুই প্রকার 'ইল্মের উভয় প্রকারেরই চর্চা হয় এবং শিক্ষা দেয়া হয় অর্থাৎ তা'লীম এবং তাওয়াজ্জুহ্ উভয়ই প্রদান করা হয়।
অনেকেই হয়তো জানেন না যে আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালার একমাত্র মনোনীত দ্বীন ইসলামের 'ইল্ম প্রধানত দুই প্রকারের। যেমন: হাদীস শরীফে এসেছে:
عَنِ الْحَسَنِ ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : اَلْعِلْمُ عِلْمَانِ: عِلْمٌ فِيْ الْقَلْبِ فَذَاكَ الْعِلْمُ النَّافِعُ، وَعِلْمٌ عَلَى اللِّسَانِ فَتِلْكَ حُجَّةُ اللهِ عَلٰى عِبَادِهِ. (مصنف ابن أبي شيبة، رقم: ٣٤٣٦١، والحكيم، والدارمي، والخطيب، وابن النجار، والبيهقي)
অনুবাদ: “হযরত হাসান হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ্ ইরশাদ করেছেন: “ইল্ম দুপ্রকার। {যথা:} ১.‘ইল্মুল্ ক্বাল্ব। আর উহাই হচ্ছে উপকারী ‘ইল্ম। ২.‘ইল্মুল্ লিসান। আর উহাই হচ্ছে বান্দাদের বিপক্ষে আল্লাহ্র প্রমাণ।” (মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বাহ্, হাকীম, দারেমী, খত্বীব, ইবনুন্ নাজ্জার, বায়হাক্বী)
ইমাম বুখারী ‘কিতাবুল ‘ইল্ম’ এর মাঝে বর্ণিত হয়েছে:
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ حَفِظْتُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ وِعَاءَيْنِ فَأَمَّا أَحَدُهُمَا فَبَثَثْتُهُ وَأَمَّا الْآخَرُ فَلَوْ بَثَثْتُهُ قُطِعَ هٰذَا الْبُلْعُوْمُ. (صحيح البخاري، رقم الحديث: ١٢٠)
অনুবাদ: হযরত আবূ হুরায়রাহ্ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমি রসূলুল্লাহ্ ﷺ হতে বিদ্যার দু’টি পাত্র অর্থাৎ দুপ্রকার বিদ্যা সংরক্ষণ করেছি। একটি তোমাদের মাঝে ছড়িয়ে দিলাম, অপরটি যদি (সাধারণ লোকের মাঝে) ছড়িয়ে দেই তাহলে আমার গলা কাটা যাবে।” (বুখারী শরীফ)
অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় عمدة القاري এর ৩য় খন্ডের ৩৬৫ পৃষ্ঠায় এসেছে:
اَلْمُرَادُ بِالْأَوَّلِ عِلْمُ الْأَحْكَامِ وَالْأَخْلَاقِ وَبِالثَّانِيْ عِلْمُ الْأَسْرَارِ الْمَصُوْنِ عَنْ الْأَغْيَارِ الْمُخْتَصِّ بِالْعُلَمَاءِ بِاللهِ مِنْ أَهْلِ الْعِرْفَانِ. (عمدة القاري شرح البخاري)
অনুবাদ: “প্রথম প্রকার ‘ইল্ম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘ইল্মুল আহ্কাম ওয়াল আখ্লাক্ব (বা ‘ইল্মুশ শরী‘য়াত)। দ্বিতীয় প্রকার ‘ইল্ম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘ইল্মুল আস্রার (বা ‘ইল্মুল মা‘রেফাত); যা সাধারণ মানুষের থেকে সংরক্ষিত। মা‘রেফাতের অধিকারী আল্লাহ্র জাত ও সিফাত সম্পর্কে জ্ঞানী ব্যক্তিগণের সাথে সম্পর্কিত।” (‘উমদাতুল ক্বারী লিল-‘আইনী)
এ দ্বিতীয় প্রকার যাকে পবিত্র হাদীসের মাঝে উপকারী ‘ইল্ম বলা হয়েছে এ ‘ইল্ম ব্যতীত ‘ইবাদত মাকবুল হওয়ার স্তরে উন্নীত হতে পারে না। যেমন, যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহ ইমাম মালিক বলেছেন:
مَنْ تَصَوَّفَ وَلَمْ يَتَفَقَّهْ فَقَدْ تَزَنْدَقَ، وَمَنْ تَفَقَّهَ وَلَمْ يَتَصَوَّفْ فَقَدْ تَفَسَّقَ، وَمَنْ جَمَعَ بَيْنَهُمَا فَقَدْ تَحَقَّقَ". (مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح)
অনুবাদ: “যে ব্যক্তি ‘ইল্মে তাছাউফ বা মা‘রেফাত শিক্ষা করল অথচ ‘ইল্মে ফিক্হ বা শরী‘য়াত শিক্ষা করল না সে যিনদীক (বেদ্বীন) হল। আর যে ‘ইল্মে ফিক্হ বা শরী‘য়াত শিক্ষা করল কিন্তু ‘ইল্মে তাছাউফ বা মা‘রেফাত শিক্ষা করল না সে ফাসেকী করল, আর যে ব্যক্তি এ দুয়ের সমন্বয় করল অর্থাৎ উভয় বিদ্যা শিক্ষা করল, সে সঠিক করল।” (মিরক্বাতুল্ মাফাতীহ্ শার্হু মিশ্কাতিল মাসাবীহ্)
সুতরাং, আমরা জানতে পারলাম যে 'ইল্ম প্রধানত দুই প্রকার যা নিম্নে আরেকটু স্পষ্ট করে উল্ল্যেখ করা হল,
❑ ‘ইল্মের প্রকারভেদ:
‘ইল্ম দু’প্রকার। যথা: ১.‘ইল্মুল্ লিসান ও ২.‘ইল্মুল্ ক্বাল্ব।
১. ‘ইল্মুল্ লিসান এর পরিচয়:
‘ইল্মুল্ লিসান যা ‘ইল্মুশ্ শরী‘য়াত, ‘ইল্মুজ্ জাহের, ‘ইল্মুল্ আহ্কাম, ‘ইল্মুল্ ফিক্হ, ‘ইল্মুল্ মু‘য়ামালা ইত্যাদি নামেও পরিচিত। মানব জীবনে কুরআন-সুন্নাহ্র বিধান তথা হালাল হারাম ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত হওয়াকে ‘ইল্মুল্ লিসান বা ‘ইল্মুশ্ শরী‘য়াত বলা হয়। সকল নবী ও রসূলকে অহীর মাধ্যমে এ ‘ইল্ম দান করা হয়েছে। যেমন, কুরআনুল কারীম ও অন্যান্য আসমানী কিতাব। এ ‘ইল্ম অর্জন করার মাধ্যম হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক, জবান, চোখ, কান, হাত ইত্যাদি। ছাত্র ওস্তাদের নিকটে বসে মনযোগ দিয়ে ওস্তাদকে দেখতে হয়, ওস্তাদের কথা শুনতে হয় এবং ওস্তাদের সাথে প্রয়োজনে কথা বলতে হয় ও হাত দিয়ে ওস্তাদের কথা লিখতে হয়। উল্লেখিত অঙ্গগুলো সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে শরী‘য়াতের ‘ইল্ম বা জ্ঞান ওস্তাদের মস্তিষ্ক থেকে শিক্ষার্থীর মস্তিষ্কে স্থানান্তরিত হয়। আর এভাবেই ছাত্র শরী‘য়াতের ‘আলেমে পরিণত হয়। সূতরাং শরী‘য়াতের ‘ইল্ম মস্তিষ্কের সাথে সম্পর্কিত যা মুখস্ত করতে হয়।
২. ‘ইল্মুল্ ক্বাল্ব এর পরিচয়:
‘ইল্মুল্ ক্বাল্ব যা ‘ইল্মুল্ বাত্বেন, ‘ইল্মুল্ মা‘রেফাত, ‘ইল্মুল্ ইয়াক্বীন, ‘ইল্মুল্ ইহ্সান, ‘ইল্মুল্ ইখ্লাস, ‘ইল্মুত ত্বরীক্বত, ‘ইল্মুল্ হাক্বীক্বত, ‘ইল্মুল্ ‘ইরফান, ‘ইল্মুল্ আস্রার, ‘ইল্মুল্ মুকাশাফা, ‘ইল্মুল্ ফিরাসাত, ‘ইল্মুত তাসাওউফ, ‘ইল্মুত তায্কিয়া, ‘ইল্মুল্ মাওহিবা, ‘ইল্মুল্ বেলায়াত, ‘ইল্মুল্ লাদুন্নী ইত্যাদি নামেও পরিচিত। (ক্বাল্ব বা অন্তর সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে অসংখ্যবার উল্লেখ করা হয়েছে যা ত্বরীক্বতের ভাষায় একটি লতীফার নাম। এটি বাম স্তনের দু’আঙ্গুল নিচে অবস্থিত যা মা‘রেফাতের কেন্দ্রবিন্দু)। আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের পরিচয় ও নৈকট্য লাভ করার জ্ঞানই হচ্ছে ‘ইল্মুল্ ক্বাল্ব (ক্বাল্ব সম্পর্কিত জ্ঞান)। যা হক্কানী শায়খের সোহ্বাত, ফায়েয ও তাওয়াজ্জুহ লাভের মাধ্যমে শায়খের ক্বাল্ব থেকে সালেকের ক্বাল্বে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। এ ‘ইল্ম অর্জন করার মাধ্যমই হল ক্বাল্ব (এ জ্ঞান অর্জনের জন্য মস্তিষ্ক, জবান, চোখ, কান, হাত ইত্যাদির প্রয়োজন হয় না)। কেউ ইচ্ছা করলেই নিজে নিজে এ জ্ঞান অর্জন করতে পারে না।
❑ মা‘রেফাতের উন্নতি লাভ ও আল্লাহ্ প্রাপ্তিতে হক্কানী শায়খের নিকট বাই‘য়াত এবং তাওয়াজ্জুহ্ গ্রহণই একমাত্র পথ:
মানব জাতির চির দুশমন শয়তান সকল ‘ইবাদতে সর্বদা মানুষকে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে। এ ছাড়াও মানবদেহে নফস বা প্রবৃত্তি নামক এমন এক গোপন শক্তি রয়েছে, যার কুমন্ত্রণার ফলে সমস্ত দেহ আক্রান্ত হয়ে যায় এবং সে সর্বদা প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে স্বীয় মূল্যবান সময়গুলো অতিবাহিত করে এবং তারই অনুসরণে দেহ-মন অন্যায় অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে আল্লাহ্ ও রসূল প্রাপ্তির কোন কথা ও কাজ তার কাছে ভাল লাগে না। কারণ প্রবৃত্তি বা নফ্সই সকল ওয়াস্ওয়াসা এবং অনিষ্টের মূল। এমনকি প্রবৃত্তির অনুসরণে আল্লাহ্ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত মানুষের সূক্ষ্মদর্শী অন্তরটিতেও গুণাহের কালিমার পর্দা পড়ে যায়। যে সম্পর্কে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ «إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيْئَةً نُكِتَتْ فِيْ قَلْبِهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ. (اَلتِّرْمِذِيُّ، رقم الحديث: ٣٣٣٤، أَحْمَدُ، اِبْنُ مَاجَةَ، اَلنَّسَائِيُّ، مِشْكَوةُ)
অনুবাদ: হযরত আবূ হুরায়রাহ্ থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন: “নিশ্চয়ই কোন মুমিন বান্দা যখন গুণাহ করে তখন তার ক্বাল্বে একটি কাল দাগ পড়ে যায়।” (র্তিমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ্, আহ্মাদ, মিশ্কাত)
শায়খে কামিলের হাতে বাই‘য়াত গ্রহণ করে তাঁর নিকট থেকে তাওয়াজ্জুহ্ প্রাপ্ত হলে নফসের ধোঁকা এবং শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত হওয়া যাবে ও প্রকৃত আত্মশুদ্ধিও অর্জিত হবে। কেননা, শায়খে কামিলের ক্বাল্বে আল্লাহ্ প্রদত্ত নূর থাকার কারণে সে নূরাণী ফায়েযের মাধ্যমে অতি সহজেই সালেকের ক্বাল্বের কালিমাগুলো দূর করে ক্বাল্বকে নূরাণী করতে সক্ষম হন। যার ফলে সালেকের পরিপুর্ণ তাযকিয়া অর্জিত হয় এবং তার ক্বাল্ব শয়তানী ওয়াস্ওয়াসা মুক্ত হয়ে সেখানে আল্লাহ্ আল্লাহ্ নামের যিকিরও জারী হয়ে যায়। এমনিভাবে তাঁর তাওয়াজ্জুহ্ এর শক্তিতে মা‘রেফাতের সকল স্তরে উন্নীত হওয়াও সালেকের জন্য সহজ হয়ে যায়।
ত্বরীক্বত জগতের শিরোমনি হযরত গাউছুল ‘আজম ‘আবদুল কাদির জিলানী বলেছেন: “তুমিতো দৃষ্টি শক্তিহীন অন্ধ ব্যক্তির ন্যায়। তাই তুমি ‘আরিফ তথা মুর্শিদে কামিলের সন্ধান কর। তিনি তোমায় পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবেন। তুমিতো মূর্খ, তোমার উচিত এমন ব্যক্তির অনুসন্ধান ও অন্বেষণ করা, যিনি তোমায় জ্ঞান দান করবেন। এমন দিশারীর সাহচর্য লাভ কর এবং তাঁরই আদেশ নিষেধ মেনে চল। তাঁরই নিকট ত্বরীক্বতের এ অজানা-অচেনা পথের পরিচয় জেনে নাও। মা‘রেফাতের শীর্ষস্থান লাভ না করা পর্যন্ত তাঁর সাহচর্য পরিহার করো না।”
আল্লাহ্ তা‘য়ালা আল্ কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন:
وَاصْبِرْ نَفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ. (الكهف : ٢٨)
অনুবাদ: “হে হাবীব! আপনি নিজেকে সে সকল ব্যক্তিদের সাথে সংশ্লিষ্ট রাখুন, যারা আল্লাহ্ তা‘য়ালাকে স্মরণ করেন এবং ডাকেন।” (সূরাহ্ কাহ্ফ: আয়াত নং ২৮)
হাদীস শরীফে এসেছে:
عَنْ أَبِيْ رَزِيْنٍ ، أَنَّهُ قَالَ لَهُ رَسُوْلُ اللهِ : "أَلَا أَدُلُّكَ عَلٰى مِلَاكِ هٰذَا الْأَمْرِ الَّذِيْ تُصِيْبُ بِهِ خَيْرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ؟ عَلَيْكَ بِمَجَالِسِ أَهْلِ الذِّكْرِ، وَإِذَا خَلَوْتَ فَحَرِّكْ لِسَانَكَ مَا اسْتَطَعْتَ بِذِكْرِ اللهِ. (شُعَبُ الْإِيْمَانِ، رَقْمُ الْحَدِيْث: ٩٠٢٤، أَبُوْ نُعَيْمٍ اَلْأَصْبَهَانِيُّ، جَامِعُ الْأَحَادِيْثِ، اِبْنُ عَسَاكِرٍ)
অনুবাদ: হযরত আবূ রাযীন থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রসূলুল্লাহ্ তাঁকে বলেছেন: “আমি কি তোমাকে এ দ্বীনের অমরত্ব বা মৌলিক এমন কথা বলে দেব না, যাতে তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ অর্জন করতে সক্ষম হও?” তা হল এই যে, যাঁরা আল্লাহ্ তা‘য়ালার যিকির করে তাঁদের মজলিসে বসা নিজের জন্য অপরিহার্য করে নিবে এবং যখন একা থাকবে, তখন আল্লাহ্ তা‘য়ালার যিকিরে নিজের জিহবাকে যত বেশি পার নাড়াতে থাকবে।” (শু‘য়াবুল ঈমান লিল-বায়হাক্বী, আবূ নু‘য়াইম আল-আস্বাহানী, জামি‘উল আহাদীস, ইবনু ‘আসাকির)
কাজেই মুর্শিদের সাহর্চয সালেকের জন্য গনীমত। এ জন্যই মাওলানা রুমী বলেছেন:
“সামান্য সময় স্বীয় মুর্শীদের খেদমতে হাজির থাকা রিয়া বিহীন শত বছরের ‘ইবাদত অপেক্ষা উত্তম।”
শায়খে কামিলের সোহবাত ও তাওয়াজ্জুহ্ গ্রহণ ব্যতীত ‘ইল্মে মা‘রেফাতের সবক ও মাকামসমূহে উন্নতি লাভ করা কখনও সম্ভব নয়। মা‘রেফাতের মাকামসমূহ কেবল মৌখিক যিকির দ্বারাও অর্জিত হয় না। তাছাউফের প্রতিষ্ঠান কায়েম, তাছাউফের পত্র-পত্রিকা প্রকাশ এবং তাছাউফের গ্রন্থাদি অধ্যায়ন করেও মা‘রেফাত অর্জিত হয় না।
আমাদের কার্যক্রমসমূহঃ