ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি দিবস উপলক্ষে মাহফিলের আয়োজন
তাযকিয়া ফাউণ্ডেশনের অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ইসলামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পর্বভিত্তিক মাহফিল পালন করা। সে জাতি কখনোই উন্নতি সাধন করতে পারে না বা উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে পারে না, যে জাতি তার সোনালী ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভুলে যায় বা স্মরণে রাখার গুরুত্ব বোঝে না। তাই, বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের এবং ধাঁচের ফিতনায় জর্জরিত মুসলিম উম্মাহ্কে ইসলামের মূল ধারায় টিকে থাকার শিক্ষা প্রদান লক্ষ্যে তাযকিয়া ফাউণ্ডেশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, যুগ যুগ ধরে খেদমতের আঞ্জাম দেয়া ইসলামের মহান মনিষীগণের অবদান স্মরণ এবং গুরুত্বপূর্ণ 'ইবাদাতমূখর ইসলামি দিবসগুলোকে সামনে রেখে পর্বভিত্তিক মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও সাপ্তাহিক প্রত্যেক জুম'আর রাতে নিয়মিত মাহফিলের আয়োজন করা হয় যাতে করে একজন মুসলিম প্রতিনিয়ত 'ইল্ম চর্চায় রত থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণাকে মোকাবেলা করে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল ব্যক্তিদের কাতারে শামিল থেকে শেষ হাসিটা হাসতে পারে। আপনি তাযকিয়া ফাউণ্ডেশনের মাহফিলে আসলে নিজেই দেখতে পারবেন এখানকার আয়োজন এবং কার্যক্রম কতটা যুগোপযোগী, প্রোডাক্টিভ, প্রো-এক্টিভ, অভিনব এবং সকল কিছু কতটা কুরআন সুন্নাহের দলিল ভিত্তিক।
তাযকিয়া ফাউণ্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক মাহফিলগুলোর মাঝে রয়েছে,
পবিত্র 'ঈদে মিলাদুন্নাবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপন। এই মাহফিল হচ্ছে অত্র ফাউণ্ডেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাহফিল। যেহেতু রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন বিশ্বমানবতার শিক্ষক। তিনিই মানুষদেরকে তাওহীদ শিখিয়েছেন, ঈমান শিখিয়েছেন, ইসলাম শিখিয়েছেন, আখলাক শিখিয়েছেন, এবং যাবতীয় 'ইবাদাতসমূহ শিখিয়েছেন। আর, আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালা তাঁকে সৃষ্টিজগতসমুহের মাঝে স্বীয় রহমত হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। তাই, এই সুমহান সত্তাকে স্মরণ এবং তাঁর পবিত্র জীবনী থেকে শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে, এই ধরাধামে তাঁর পবিত্র শুভাগমন থেকে শুরু করে তাঁর পুরো জীবনীর উপরে পহেলা রবিউল আউয়্যাল থেকে শুরু করে দ্বাদশ রবিউল আউয়্যাল পর্যন্ত ১২ দিন ব্যাপী দীর্ঘ মাহফিলের জমজমাট আয়োজন হয়ে থাকে, যেখানে দেশ বরেণ্য 'উলামায়ে কিরামগন এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত স্কলারগণ তাশরিফ আনেন এবং কুরআন সুন্নাহ্ এর দলিল ভিত্তিক আলোচনা ও গুরুত্বপূর্ণ নসিহতবাণী পেশ করে থাকেন।
পবিত্র বদর দিবস উপলক্ষ্যে মাহফিলের আয়োজন। ইসলামের ইতিহাসে পবিত্র বদর দিবস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোর মাঝে একটি যেহেতু এই যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের অস্তিত্ব লড়াইয়ের যুদ্ধ। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র রমাদ্বান মাসের ১৭ তারিখ তাঁর মুষ্টিমেয়, আধুনিক অস্র সরঞ্জামাদি বিহীন, পদব্রজে চলা, যুদ্ধের কোন প্রকার প্রস্তুতিহীন একদল জানবাজ 'আশেক সাহাবায়ে কিরাম রিদ্বওয়ানুল্লাহি তা'য়ালা 'আলাইহিম আজমা'ঈনকে সাথে নিয়ে বদর প্রান্তরে এক আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত, যুদ্ধের যাবতীয় ট্রেইনিং প্রাপ্ত, তুলনামূলক এক বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালার প্রতি অপরিসীম আস্থা ও বিশ্বাসের চূড়ান্ত মডেল উপস্থাপন করে ইসলামকে বিশ্বব্যাপী সমুন্নত এবং প্রতিষ্ঠিত করে মানবতাকে জুলুম, অন্যায়, রাহাজানী, এবং খোদাদ্রহীতা থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। সুতরাং সেই মহান ঘটনা কে স্মরণ এবং উম্মাতে মুহাম্মাদী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তিত্ব বদরী সাহাবায়ে কিরামগনের স্মরণে আয়োজিত হয় পবিত্র বদর মাহফিল। এই মাহফিলে বদরের যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সাহাবায়ে কিরামগনের অকৃত্রিম এবং তুলনাহীন ভালোবাসার দৃষ্টান্ত উপস্থাপনের ঘটনা, এবং বদর যুদ্ধের শিক্ষা ও তাৎপর্যমূলক দলিল প্রমাণ ভিত্তিক তাত্ত্বিক আলোচনা করা হয়, যা একজন মুসলমানের জন্যে জানা অতীব জরুরী।
পবিত্র আশুরা দিবস উপলক্ষ্যে মাহফিল। মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী ঘটনাবহুল দিবসটির নাম হচ্ছে ১০-ই মহরম। এই দিবসে আল্লাহ সুবহানাহু তা'য়ালা অসংখ্য ঘটনা ঘটিয়েছেন এবং কিয়ামতও সংঘটিত হবে এই দিবসে। আর, উম্মাতে মুহাম্মাদী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রাণপ্রিয় কন্যা সায়্যিদা নিসা-ইল 'আলামীন, খাতুনে জান্নাত সায়্যিদা ফাতিমা আয-যাহরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা 'আনহা এর সুযোগ্য শাহজাদা সায়্যিদুনা ওয়া ইমামুনা ওয়া সায়্যিদা শাবাবি আহলিল জান্নাহ্ ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু এর শাহাদাতের নির্মম ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং, এই মাহফিল মূলত দুটি সেকশনে বিভক্ত। মাহফিলের প্রথমাংশে আশুরার দিবসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাবলী সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং দ্বিতীয় অংশে কারবালার মর্মান্তিক ইতিহাস, কারবালার প্রেক্ষাপট এবং মুসলিম উম্মাহ্র উপর এর তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র আহলে বাইতগনের সুমহান মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য এবং তাঁদেরকে ভালোবাসা ও অনুসরণের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত দালিলিক এবং তাত্বিক আলোচনা করা হয়।
ইতিহাসের যে সকল মহান ব্যক্তিদের স্মরণে ঈসালে সাওয়াব মাহফিল আয়োজিত হয়:
সায়্যিদুনা হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত 'উমার ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত 'উসমান যিন-নূরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত 'আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
আম্মাজান সায়্যিদা খাদিজাতুল কুবরা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা।
আম্মাজান সায়্যিদা 'আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা।
সায়্যিদা নিসা-ইল-'আলামীন সায়্যিদা ফাতিমা আয-যাহরা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা।
সায়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং সায়্যিদুনা
হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত উয়াইস আল-ক্বারণী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
ইমামুনাল আ'যাম হযরত ইমাম আবু হানিফা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত মুহীউদ্দীন 'আব্দুল ক্বাদির জীলানী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সায়্যিদুনা হযরত খাজা মাঈনুদ্দীন চিশতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
ত্বরিকায়ে মদীনার জামাতের ইমাম সায়্যিদুনা হযরত ডা. মুহাম্মাদ বাদি'উজ্জামান রহমাতুল্লাহি আলাইহি।
তাযকিয়া ফাউন্ডেশনের সম্মানিত চেয়ারম্যান সাহেব হাফিজাহুল্লাহ এর সম্মানিত বাবা মায়ের ঈসালে সাওয়াব মাহফিল।
ঈসালে সাওয়াব মাহফিলগুলোতে এসকল মহান মনিষীগনের জীবনির বিভিন্ন দিক, ইসলামের প্রচার প্রসার এবং ইসলামি উন্নত জীবন গঠনে তাঁদের অবদান, উম্মাতের জন্যে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ নসিহত, এবং একজন মুসলমানের জন্য তাঁদের জীবনে থাকা শিক্ষনীয় বিষয়গুলো যথাসম্ভব সর্বোচ্চ গুরুত্ব এবং আদবসহ আলোচনা করা হয়।
ইবাদাতমূখর ইসলামি দিবস সমূহ উদযাপন উপলক্ষ্যে যে মাহফিলগুলা আয়োজিত হয়:
পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর।
পবিত্র লাইলাতুম মিন নিসফু শা'বান।
পবিত্র লাইলাতুল ইসরা।
পবিত্র লাইলাতু ঈদিল ফিতরি।
পবিত্র ইয়াওমু 'আরাফাহ।
পবিত্র লাইলাতু ঈদিল আদ্বহা।
এই সকল পবিত্র দিবসসমূহ তাযকিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক কুরআন সুন্নাহভিত্তিক উচ্চতর গবেষণামূলক বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা, সুন্নাহভিত্তিক বিভিন্ন নফল 'ইবাদাত এবং দূয়া মুনাজাতের মাধ্যমে পালন করা হয়।
সুতরাং আপনারা দেখতে পাচ্ছেন তাযকিয়া ফাউন্ডেশনের মাহফিলসমূহের আয়োজন কত ব্যতিক্রমধর্মী এবং সময়োপযোগী। ফিতনার মাঝে হাবুডুবু খাওয়া মানুষগুলোকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে তাঁদেরকে স্বচ্ছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি সুন্নাহভিত্তিক জীবন উপহার দানে তাযকিয়া ফাউন্ডেশনের নিবেদিত প্রাণ 'আলেমগন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এবং তাঁর হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র ভালোবাসায়।
আমাদের কার্যক্রমসমূহঃ